স্বাধীনতা
সকাল বেলা ফোন বারবার বেজেই চলেছে। এইদিকে স্বাধীনের ঘুম ভাঙবে এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
স্বাধীনতা জাদুঘর থেকে বের হয়ে দুজনে রমনা পার্কের বেঞ্চে বসে থাকবে বিকাল পর্যন্ত। এরপরে মুক্তমঞ্চে গিয়ে বসে থাকার কথা দুজনের।
কিন্তু জাদুঘরে ঢোকার পরেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। বিজয়া স্বাধীনের সাথে কথা বলছে না। স্বাধীন কিছুক্ষন চেষ্টা করার পরে চারিদিকে মানুষের চেয়ে থাকা দেখে কিছুক্ষন চুপ করে থাকলো। কিন্তু না বিজয়া কোন কথায় বলছে না। স্বাধীন লজ্জার মাথা খেয়ে বিজয়াকে প্রশ্ন করেইই গেলো। আর জাদুঘরের মধ্যে সবাই তাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করলো।কিন্তু বীজয়ার রাগ কোনভাবেই কমলো না। এক সময় স্বাধীন চুপ করলো।
জাদুঘরের মধ্যে শুনশান নিরবতা পালন শেষে দুজনে যখন বের হলো তখন ঘড়ির কাঁটায় বাজছে ঠিক ১২.৩০ মিনিট। বিজয়া বললো আশা করি তোমার সাথে আমার আর কোনদিন দেখা হবে না, এ কথা বলেই টিএসসির দিকে রওনা দিলো। স্বাধীন কিছুই বললো না। শুধুমাত্র বিজয়ার দিকে চেয়ে আছে। কিন্তু বিজয়া যে হাঁটা শুরু করেছে পিছনে আর একবারের জন্যও ফিরে তাকালো না।
অবশেষে স্বাধীন লেকের পাশে বেঞ্চে বসে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো।
দুঃস্বপ্ন দেখের পরে স্বাধীনের ঘুম উধাও হয়ে গেছে। স্বাধীন ঘুম থেকে উঠে দেখে দুপুর ১২.৩০ বাজে। সকাল থেকে এই পর্যন্ত ১৭৭ বার ফোন বেজেছে কিন্তু স্বাধীন টের পায় নি। এটা একটা মিরাকেলও বলা যেতে পারে।এতোবার ফোন বাজলো কিন্তু স্বাধীনের ঘুম ভাঙলো না। স্বাধীন বড়ো অন্যায় করে ফেলেছে।
ফোন ব্যক করার সাথে সাথেই রিসিভ হয়েছে কিন্ত কোন কথাই আসছে না।বিজয়া ফোনটা রিসিভ করে শুধু স্বাধীনের কথা শুনছে। স্বাধীন কতভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছে তার ভুল হয়ে গেছে।কিন্তু বিজয়ার মুখ থেকে একটি শব্দও শোনা যাচ্ছে না।
ফোনের ব্যালেন্স শেষ ফোন কেটে গেছে। কিছুক্ষন পরে একটা ম্যাসেজ এসছে, লেখা-
স্বাধীনের স্বাধীনতা আর বিজয়ার পরাজয়।
কিছুদিন আগে একবার বিজয়া কে স্বাধীন বলেছিলো, পৃথিবীতে মানুষ ভালোবাসা ছাড়া বাঁচতে পারে না। আর স্বাধীন স্বাধীনভাবে ঘুমাতে ভালোবাসে। স্বাধীনের এই কথাটাই কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
No comments